ভূমি মন্ত্রণালয় ২০১৭

  • ০৩-০৩-২০১৭০৩-০৩-২০১৭
  • সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম–কম্পিউটার অপারেটর/সহকারী হিসাব রক্ষক/ক্যাশিয়ারসাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম–কম্পিউটার অপারেটর/সহকারী হিসাব রক্ষক/ক্যাশিয়ার

১.নাতিদীর্ঘ রচনা লিখুন:


“বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকি এবং করণীয়”


ভূমিকা:- এমন অনেক প্রাকৃতিক পরিবর্তন আমরা লক্ষ করি যা মানবজীবনে কল্যাণ বয়ে আনে। আবার এই পরিবর্তন কখনো আনে ধ্বংস, আনে মৃত্যু। বর্তমানে পরিবেশের বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি। নানা প্রকার ভূপ্রক্রিয়া এর জন্য দায়ী। মাধ্যাকর্ষণ, ভূতাপীয় শক্তি, সৌরশক্তি প্রভৃতি ভূপৃষ্ঠের কোথাও ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনে, আবার কখনো খুব দ্রুত পরিবর্তন সাধন করে। সাধারণভাবে বহিঃশক্তির সঙ্গে জড়িত ভূপ্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনে। অপরদিকে, অন্তঃশক্তির সঙ্গে জড়িত ভূপ্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠে দ্রুত পরিবর্তন সাধন করে। ভূপৃষ্ঠে দ্রুত ও আকস্মিক পরিবর্তন সাধনকারী প্রক্রিয়ার মধ্যে ভূমিকম্প অন্যতম।

ভূমিকম্প পরিচিতি:- ভূমিকম্প হলো মাটির কম্পন। ভূমিকম্পকে ইংরেজিতে বলা হয় Earthquake। কোনো প্রাকৃতিক কারণবশত ভূপৃষ্ঠ কখনো কখনো আকস্মিকভাবে কেঁপে ওঠে। ভূত্বকের এ কেঁপে ওঠাকে ভূমিকম্প, বলা হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর অভ্যন্তরে কোনো এক স্থানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়। ভূঅভ্যন্তরে যে স্থানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয় তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র এবং কেন্দ্রের ঠিক ওপরে ভূপৃষ্ঠের বিন্দুকে উপকেন্দ্র বলে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র সাধারণত ভূপৃষ্ঠ থেকে অভ্যন্তরে ৩০ কি.মি.- এর মধ্যে অবস্থিত। 

ভূমিকম্পের কারণ:- সাধারণত অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কারণে ভূমিকম্প হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক ভূমিকম্প হয় অভ্যন্তরীণ কারণে এবং কৃত্রিম ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয় কৃত্রিম কারণে। তাছাড়া ভূমিকম্পের জন্য নিম্নলিখিত কারণগুলো দায়ী: আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ভূমিকম্প হয়। অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিকম্প অগ্ন্যুৎপাতের প্রকৃতির সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। জীবন্ত বিস্ফোরক আগ্নেয়গিরি থেকে বিস্ফোরণ ঘটলে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে বিরামহীন ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এছাড়া ভূ-আন্দোলন, তাপ বিকিরণ, ভূপৃষ্ঠের চাপ বৃদ্ধি, ভূগর্ভে পানির প্রবেশ, শিলাচ্যুতি বিস্ফোরণ ইত্যাদি কারণে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়ে থাকে।

ভূমিকম্পের মাত্রা নিরূপণঃ- ভূকম্পন এবং এর মাত্রার তীব্রতা নিরূপণের জন্য সাধারণত 'সিসমোগ্রাফ' এবং 'রিখটার স্কেল' ব্যবহৃত হয়। সিসমোগ্রাফের সাহায্যে ভূকম্পনের অনুলিপি প্রস্তুত করা সম্ভব। অপরদিকে, ভূমিকম্পের মাত্রা নিরূপণ করা যায় রিখটার স্কেলের সাহায্যে। এই স্কেলের মান শূন্য (০) থেকে ১০ পর্যন্ত। শূন্য (০) থেকে ২ মাত্রার ভূমিকম্পকে মৃদু (মাইন্ড), ২ থেকে ৪ পয়েন্টের নিচের মাত্রায় ভূমিকম্পকে মাঝারি (মডারেট) ৫ থেকে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পকে প্রবল (সিভিয়ার) এবং ৭-এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্পকে বিধ্বংসী (ভায়োলেট) ভূমিকম্প বলা হয়। ৮ মাত্রার কোনো ভূমিকম্প একটি শহরকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

বাংলাদেশে ভূমিকম্পের অশনি সংকেতঃ- বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ এবং আমেরিকান ভূতাত্ত্বিক জরিপ ও ভারতীয় ভূতাত্ত্বিক জরিপের বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ বর্তমানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের মুখোমুখি। বাংলাদেশের বৃহত্তম চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে কিছুদিন যাবৎ ঘন ঘন ছোটো মাপের যে কম্পনগুলো হচ্ছে সেগুলো বড়ো ধরনের ভূমিকম্পের ইঙ্গিতবহ বলে মনে করেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। চট্টগ্রামে যে ভূমিকম্পনগুলো রেকর্ড হচ্ছে সেগুলো বার্মিজ ও আন্দামান নিকোবর প্লেটের সঞ্চরণের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ বর্তমানে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। গত এক দশকে আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। বাংলাদেশে সংঘটিত বিভিন্ন সময় ভূমিকম্পের যে মাত্রা নির্ণয় করা হয়, তা নিম্নরূপ:

চট্টগ্রাম = ১৯৯৭ = ৬.৬, মহেশখালী = ১৯৯৯ = ৫.২, ঢাকা = ২০০১ = ৪.৮, ঢাকা = ২০০২ = ৫.৫, ঢাকা = ২০১৫ = ৪.৬

বাংলাদেশে যে ভূমিকম্পের অশনি সংকেত বেজে উঠছে তা এই সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। বাংলাদেশে ভূমিকম্প এলাকা ১৯৯৩ সালে প্রণীত ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের সাইজমিক জোনিং ম্যাপে ভূমিকম্পের মাত্রানুযায়ী বাংলাদেশকে তিনটি এলাকা বা জোনে ভাগ করা হয়েছে:

ক. মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ জোনঃ- রিখটার স্কেলে মাত্রা ৭। এই এলাকা দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিয়ে গঠিত। বৃহত্তম সিলেট, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুরের পূর্বাঞ্চল, গাইবান্ধা, বগুড়া সিরাজগঞ্জ ও বাহ্মণবাড়িয়া এই জোনের আওতাভক্ত।

খ. মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ জোন:- রিখটার স্কেলে মাত্রা ৬। দেশের মধ্যভাগ বিশেষ করে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুরের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণাংশ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, টাঙাইল, নরসিংদী, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলা এই জোনের আওতাভুক্ত।

গ. কম ঝুঁকিপূর্ণ জোনঃ- রিখটার স্কেলে মাত্রা ৫। এই এলাকা দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল নিয়ে গঠিত। মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, রাজশাহী প্রভৃতি অঞ্চল এই জোনের আওতাভুক্ত।

ভূমিকম্প ও ঢাকা অঞ্চলঃ- ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পৃথিবীর এমন ২০টি বড়ো নগরীর অন্যতম ঢাকা। বাংলাদেশের ভূমিকম্পন বলয় মানচিত্র অনুসারে ঢাকার অবস্থান ২ নম্বর বলয়ে। এ বলয়ে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা ৬। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী ঢাকায় এক সেমিনারে উপস্থাপিত প্রবন্ধে জানিয়েছেন, ঢাকা নগরীর ঘরবাড়ির মাত্র ৫ শতাংশ তৈরি হয়েছে সুদৃঢ় কংক্রিটে। ৩০ শতাংশ কাঠামো প্রকৌশলগত নিয়মনীতি অনুসরণ করে নির্মিত হয়েছে। আর ২১ শতাংশ ঘরবাড়ি নির্মাণে প্রকৌশলগত কোনো নিয়মনীতি মানা হয়নি। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে নগরায়ণের গতি দ্রুততর হলেও বেশিরভাগ নগরই গড়ে উঠেছে দুর্বল কাঠামোর দালানকোঠা নিয়ে অপরিকল্পিতভাবে। নগরকেন্দ্রে জমির স্বল্পতা আর উর্ধ্বমূল্যের কারণে রাজধানীতে হাইরাইজ এপার্টমেন্ট কালচার ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগকালে আশ্রয় নেওয়ার মতো খোলা জায়গাও এখন ঢাকা শহরে নেই। এছাড়াও ঢাকা শহরে রয়েছে বহু পুরাতন জরাজীর্ণ দালানকোঠা যেগুলোতে মানুষ বসবাস করে। ফলে মাঝারি মাত্রার একটি ভূমিকম্পও আমাদের দেশে বিশেষ করে ঢাকা শহরের জন্য ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির কারণ হতে পারে। 

ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়ঃ-

ক. প্রাক-দুর্যোগ প্রস্তুতি: ভূমিকম্পের পূর্বাভাস প্রদান ও পরিমাপের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন ও পরিচালনার বিষয় পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে একটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়সাধন করা প্রয়োজন। কমিটির সুপারিশসমূহের মধ্যে রয়েছে:

১. ভূমিকম্প সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ব্যাপক প্রচার।

২. পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সারা দেশে ভবন নির্মাণে জাতীয় 'বিল্ডিং কোড' এবং কোডের কাঠামোগত অনুসরণ বাধ্যতামূলক।

৩. সারা দেশের শহরসমূহের নতুন এলাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণের সময় দমকল বাহিনীর গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, ক্রেন ইত্যাদি চলাচলের কথা বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনমতো রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে।

৪. ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর যে যন্ত্রপাতির তালিকা তৈরি করেছে, সেগুলো এবং সেসব যন্ত্রপাতির প্রাপ্তিস্থানের তালিকা প্রত্যেক জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সংরক্ষণ করতে হবে। এর ফলে যন্ত্রপাতি ও জনবল দ্রুত দুর্যোগকবলিত স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

৫. ভূমিকম্পের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলকে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত করার পদক্ষেপ হিসেবে ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৬. ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে থাকা একান্ত প্রয়োজন।

৭. বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন কর্তৃক সিলেটে নির্মীয়মাণ কেন্দ্রের সাথে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা, সিলেট, রংপুর এবং চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা প্রয়োজন।

৮. বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং অন্যান্য সম্পৃক্ত সংস্থাসমূহের সমন্বয়ে ভূমিকম্প, ভূমিকম্প সম্বন্ধীয় গবেষণা, পরিমাণ, পূর্বাভাস এবং দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক গঠন ও উন্নয়ন প্রয়োজন, যা ভবিষ্যতে জাতীয় ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে।

খ. ভূমিকম্পের সময় করণীয়:- বাংলাদেশ ও ভারতের বেশিরভাগ মানুষ এমন সব দালান বা ঘরবাড়িতে বাস করেন, যেগুলো ভূমিকম্পের সময় প্রবলভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই এসব অঞ্চলের মানুষের করণীয় হলো:

১. বাড়িতে থাকলে ভূমিকম্পের সময় বাড়িতে থাকলে নিজেকে ও পরিবারের অন্যদের জীবন বাঁচানোর জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কম মাত্রার ভূমিকম্প হলেও দ্রুত বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ বা বিচ্ছিন্ন করাই শ্রেয়। এমনকি গ্যাসের চুলা, হিটার ইত্যাদি বন্ধ রাখাই ভালো। বাইরে বের হওয়ার জন্য দরজা দ্রুত খুলে দেওয়া উচিত। কেননা ঘরের উপরের অংশ ভেঙে পড়তে পারে এবং তাতে বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২. বাড়ির বাইরে থাকলে ভূমিকম্প অবস্থায় বাড়ির বাইরে থাকলে বড়ো বড়ো দালানকোঠার নিচে দাঁড়ানো উচিত নয় বরং খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকলে ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।

৩. লিফটের ভিতরে থাকলে ভূমিকম্পের সময় লিফটের ভিতরে থাকলে দ্রুত নিচে নামার চেষ্টা করতে হবে।

৪. ট্রেন বা গাড়ির ভিতরে থাকলে ট্রেনে বা গাড়িতে ওঠার পর হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হলে কোনো জিনিস ধরে স্থিরভাবে দাঁড়িয়ে থাকা উচিত যাতে ট্রেন বা গাড়ি হঠাৎ থেমে গেলে বা পড়ে গেলে-ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। 

৫. পাহাড় বা সৈকতে থাকলে ভূমিকম্পের সময় পাহাড় ধসে যেতে পারে। কাজেই বিপদাপন্ন স্থান থেকে নিরাপদ স্থানে গমন করাই উচিত। উপকূলীয় এলাকাতেও জীবননাশের ভয় থাকে। কাজেই এ বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দ্রুত উপকূলীয় এলাকা ত্যাগ করা শ্রেয়।

৬. মার্কেট, সিনেমা হল বা আন্ডারগ্রাউন্ড শপিং মলে থাকলে: ভূমিকম্পের সময় সিনেমা হল, সুপার মার্কেট কিংবা আন্ডারগ্রাউন্ড শপিং মলে অনেক জনসমাগম থাকায় আকস্মিক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হতে পারে। কাজেই ভূমিকম্পের সময় এ ধরনের কোনো স্থানে বা ভবনে থাকলে সেসব ভবন কর্তৃপক্ষ, কর্মচারী কিংবা নিরাপত্তা রক্ষীদের সাহায্য নেওয়া উচিত।

ভূমিকম্পের পরে করণীয় ব্যাপকাকারে ভূমিকম্প হলে তা ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলা সাধন করতে পারে। কাজেই সতর্কতা অবলম্বন না করলে ভূমিকম্পের পরেও নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যা সমাধানে নিম্নলিখিত বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়াই শ্রেয়।

ক. গুরুতর আহতদের না নাড়ানোই ভালো, যদি না আরো আহত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

খ. আগুন নেভানোর চেষ্টা করা উচিত।

গ. পানি, গ্যাস ও বৈদ্যুতিক লাইন পরীক্ষা করা।

ঘ. রেডিও অন রাখা যাতে দুর্যোগ পরবর্তী করণীয় নির্দেশাবলি শুনতে পাওয়া যায়।

ঙ. খালি পায়ে চলাফেরা না করে পায়ে জুতা পরা ভালো।

চ. সাধারণত ভূমিকম্পের পর আগুন লেগে অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে আগুন থেকে সাবধান থাকা শ্রেয়।

ছ. গ্যাস ও বৈদ্যুতিক মেইন সুইচ বন্ধ রাখা, যাতে অতিরিক্ত কোনো প্রকার দুর্যোগ না ঘটে।

জ. ব্যাপক দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় অসতর্কভাবে ঘোরাফেরা না করা।

উপসংহার:- বর্তমান অবস্থায় যেকোনো সময় ভূমিকম্পের মতো

মারাত্মক দুর্যোগ আমাদের জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে হাজার হাজার প্রাণের বিলোপসাধন করতে পারে। অথচ ভূমিকম্পের হাত থেকে রক্ষার জন্য তেমন কোনো কার্যকরী উদ্যোগ বিগত দিনগুলোতে নেওয়া হয়নি। তবে ভূমিকম্পের মাত্রা নিরূপণ, পরীক্ষা ও এ বিষয়ক গবেষণার জন্য চট্টগ্রামের আমবাগানে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বর্তমান সরকার এ বিষয়ে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ঢাকা, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা প্রভৃতি অফিসে চট্টগ্রামের মতো উন্নত প্রযুক্তি নির্মাণে বর্তমান সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে কিছুটা হলেও ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।


২. এককথায় প্রকাশ করুন:


ক. অণু বিষয়ক = আণবিক

খ. ইহলোক সম্পর্কিত = ঐহিক/ইহলৌকিক

গ. ধনুকের শব্দ = টঙ্কার

ঘ. যার কিছু নেই = নিঃস্ব

ঙ. হরেক রকম বোল যার = হরবোলা


৩. অর্থসহ বাক্য রচনা করুন:


ক. অমৃতে অরুচি: (দামী জিনিসের প্রতি বিতৃষ্ণা) = জ্বর হওয়ার পর বারির অমৃতে অরুচি ধরেছে।

খ. আসরে নামা: (আবির্ভূত হওয়া) = মজমায় হঠাৎ করে বড় মামা আসরে নামলেন।

গ. ইতর বিশেষ: (পার্থক্য) = জমজ হওয়ায় দুই বোনের মধ্যে তেমন কোন ইতর বিশেষ নেই।

ঘ. ঊনপঞ্চাশ বায়ু: (পাগলামী) = শাকিল সাহেবের এই বিয়ে করার জন্য মত দিয়েছে, এ যেন উনপঞ্চাশ বায়ু ।

ঙ. কান কাটা: (বেহায়া) = রমিজ সাহেবের কান কাটা স্বভাবটি আমার পছন্দ হয় নি।


৪. সন্ধি বিচ্ছেদ করুন:


ক. অপরাপর = অপর + অপর

খ. নিরাকার = নিঃ+ আকার

গ. ক্ষুৎপিপাসা = ক্ষুধ+ পিপাসা

ঘ. বনৌষধি = বন + ওষধি

ঙ. বৃহস্পতি = বৃহৎ পতি


৫.বিপরীত শব্দ লিখুন:

ক. খিড়কি = সিংহদ্বার

খ. গৃহী = সন্ন্যাসী

গ. বাহুল্য = স্বল্পতা

ঘ. জরা = যৌবন

ঙ. অনুরক্ত = বিরক্ত


৬.Write a paragraph on – “Tree Plantation”. 


Ans: Tree Plantation Trees are the most important gifts of nature. Since the down of civilization man has a close relationship with nature. They help us in maintaining the ecological balance which is essential for the preservation of life on earth. They are our friends. They play an important role in our life and economy. Tree plantation means planting more and more trees. It is essential for our existences as tree gives us oxygen and provides us with food. Yet, we cut down trees to get timber and firewood. We also use trees as our housing materials. As a result, our world is becoming tree-vacant. Cutting too many trees leads the world to desert. It is responsible for greenhouse effect. Birds and animals are losing their habitats. There will be no ecological balance. We cannot live without the oxygen. We get vitamins from the fruits of trees. The tree helps to keep the environment balanced. It prevents air pollution by taking carbon di-oxide. It saves the world from turning into desert. It brings about rainfall. Thus, it helps agricultural production. It helps soil from erosion. It keeps the soil strong. Besides, it is a great source of medicine for us. Trees give shade to protect us from the scorching heat of the sun. They help to prevent drought and floods. We get timber from trees. We use timbers in making houses, furniture etc. Trees are used are fuel. Trees are also our source of income. We can earn a lot of money by selling fruits and timber and thus help us to come out of the grip of poverty. We can also earn foreign exchange by exporting timber or furniture. It is needless to speak of the importance of tree plantation. June and July are the most suitable period for planting trees in our country. Sea-beaches, low-lying unused lands, sides of high ways and roads can be brought under scheme of tree plantation. We cannot think of our existence without them. Rabindranath says, "Back they forest, take your town." Our government has also launched a massive and ambitious programme regarding tree plantation. We should not destroy trees at random. Rather we should plant trees more and more for a better, happier and prosperous life.


৭.Translate into English:


ক. লোকটি মহাসংকটে পড়েছে।

Ans. The man has been at stake.

খ. সে এখনো ঘুমাতে যায়নি।

Ans. He has not gone to sleep yet.

গ. সূর্য ওঠার পর আমরা বেড়াতে গিয়েছিলাম।

Ans. We went to visit after the sun had risen.

ঘ. আমি আর তোমাকে বিরক্ত করব না।

Ans. I will not disturb you any more.

ঙ. উপদেশ অপেক্ষা দৃষ্টান্ত ভালো।

Ans. Example is better than precept.

চ. সে কখনো মিথ্যা কথা বলে না।

Ans. He never tells a lie.

ছ. আমি নিশ্চয়ই সেখানে যাব।

Ans. I will certainly go there.

জ. সে সূর্যাস্তের পরে বাড়ি ফিরবে।

Ans. He will return home after the sun sets.

ঝ. টাকায় টাকা আনে।

Ans. Money begets money.

ঞ. শিশুটি নাচতে নাচতে চলে গেল।

Ans. The child went away dancing.


৮. Write sentences with meaning of the following phrases and idioms-


(a) To end in smoke: ব্যর্থতার পর্যবসিত হওয়া = All my attempts to establish a college ended in smoke.

(b) First language: মাতৃভাষা = Bangla is our first language.

(c) Swan song: শেষ কর্ম = Tempest is called the swan song of Shakespeare.

(d) To smell a rat: সন্দেহ করা = When he was speaking, I smelt a rat.

(e) At stake: বিপন্ন = His life is at stake now.


.Fill in the blanks:


(a) Who are you talking---.

(b) The tree has been blown---by strong wind.

(c) We went to Barishal---boat.

(d) The man died ---over eating.

(e) I shall look---the matter.

Ans. (a) to; (b) away; (c) by; (d) from; (e) into.


১০. একটি লঞ্চে যাত্রী সংখ্যা ৪৭। মাথাপিছু কেবিনের ভাড়া ডেকের ভাড়ার দ্বিগুণ। ডেকের ভাড়া মাথাপিছু ৩০ টাকা। মোট ভাড়া প্রাপ্তি ১৬৮০ টাকা হলে কেবিনের যাত্রী সংখ্যা কত?


সমাধানঃ ধরি, কেবিনের যাত্রী সংখ্যা x জন

ডেকের যাত্রী সংখ্যা (৪৭- x) জন 

ডেকের ১ জন যাত্রীর ভাড়া ৩০ টাকা

ডেকের (৪৭-x) জন যাত্রীর ভাড়া ৩০ (৪৭ - x) টাকা 

আবার, কেবিনের ১ জন যাত্রীর ভাড়া ৩০ × ২ বা ৬০ টাকা

কেবিনের x জন যাত্রীর ভাড়া ৬০x টাকা 

শর্তমতে, ৩০ (৪৭- x) + ৬০x = ১৬৮০

১১৪১০-৩০০ + ৬০x = ১৬৮০

৩০x = ১৬৮০-১৪১০

৩০x = ২৭০/৩০

x=৯ 

উত্তরঃ কেবিনের যাত্রী সংখ্যা ৯ জন


১১. ২২০ মিটার ও ২৮০ মিটার দীর্ঘ দুটি ট্রেন যথাক্রমে ঘণ্টায় ৪৫ ও ৫৫ কি.মি. বেগে বিপরীত দিক থেকে পরস্পরের দিকে সমান্তরালভাবে আসতে থাকে। কত সময়ে ট্রেন দুটি পরস্পরকে অতিক্রম করবে?


সমাধানঃ

আমরা জানি, ১ ঘণ্টা ৩৬০০ সেকেন্ড 

ট্রেন দুটির দৈর্ঘ্যের সমষ্টি

= (২২০ + ২৮০) মি. = ৫০০ মি. 

ট্রেন দুটির গতিবেগের সমষ্টি

= (৪৫+ ৫৫) বা ১০০ কি.মি. = ১০০০০০ মি. 

এখন, ১০০০০০ মিটার যায় ৩৬০০ সেকেন্ডে


১২. যদি (x-5) (a+x) = x2-25 হয় তবে a এর মান কত?


সমাধানঃ (x-5) (a+x) = x2-25 

(x-5) (a+x) = x2-52

(x-5) (a+x) = (x+5) (x-5) 

a+x=x+5 

a+x-x=5. 

a=5

a এর মান 5


১৩. a3-7a-6 এর উৎপাদক কত?


সামাধানঃ 

=a3+a²-a2-a-6a-6 

=a² (a+1)-a (a+1)-6 (a+1) 

=(a+1) (a²-a-6) 

=(a+1) (a²-3a + 2a-6) 

=(a+1) (a+2) (a-3)


১৪. সংক্ষেপে উত্তর দিন:


ক. 'সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি' কত সালে গঠিত হয়?

উত্তর: 'সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটি' ৩০ জানুয়ারি ১৯৫২ সালে গঠিত হয়।


খ. মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা জেলা কত নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিল?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা জেলা ২ ও ৩ নং সেক্টরের অধীনে ছিল।


গ. কোন মুঘল সম্রাট বাংলার নাম দেন জান্নাতাবাদ?

উত্তর: মুঘল সম্রাট হুমায়ুন বাংলার নাম দেন জান্নাতাবাদ।


ঘ. বরিশালের প্রাচীন নাম কী?

উত্তর: বরিশালের প্রাচীন নাম চন্দ্রদ্বীপ, বাকলা ও ইসমাইলপুর।


ঙ. খাবারের সাথে গ্রহণ করা হয় এমন একটি অ্যাসিডের নাম লিখুন।

উত্তর: লেবু ও আনারসের সাথে আমরা সাইট্রিক অ্যাসিড খেয়ে থাকি।


চ. 'বাকল্যান্ড বাঁধ' 'কোন নদীর তীরে অবস্থিত?

উত্তর: ঢাকা শহরকে রক্ষার জন্য ১৮৬৪ সালে নির্মিত 'বাকল্যান্ড বাঁধ' অবস্থিত বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে।


ছ. 'সাবাস বাংলাদেশ' ভাস্কর্যটির স্থপতি কে?

উত্তর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত 'সাবাস বাংলাদেশ' অস্কর্যটির স্থপতি নিতুন কুণ্ডু।


জ. 'নুরলদীনের সারাজীবন' নাটকটির রচয়িতা কে?

উত্তর: 'নুরলদীনের সারাজীবন' কাব্যনাট্যের রচয়িতা সৈয়দ শামসুল হক।


ঝ. বাহামার রাজধানীর নাম কী?

উত্তর: বাহামার রাজধানীর নাম নাসাউ।


ঞ. জাতীয় শিশু দিবস কোন তারিখে।

উত্তর: ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস।


ট. সবচেয়ে বেশি পামওয়েল কোন দেশে উৎপাদন হয়?

উত্তর: সবচেয়ে বেশি পামওয়েল উৎপাদিত হয় ইন্দোনেশিয়ায়।


ঠ. মালদ্বীপের মুদ্রার নাম কী?

উত্তর: মালদ্বীপের মুদ্রার নাম রুপিয়া।


ড. ইউনেস্কোর সর্বশেষ সদস্য দেশের নাম কী?

উত্তর: ইউনেস্কোর সর্বশেষ সদস্য দেশের নাম ফিলিস্তিন। (২৩ নভেম্বর ২০১১)


ঢ. ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল কোন দেশে অনুষ্ঠিত হয়?

উত্তর: কাতারে।


ণ. বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোন খেলোয়াড় প্রথম সেঞ্চুরি করেন?

উত্তর: বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। (৯ মার্চ ২০১৫)


১৫. পূর্ণরূপ লিখুন:


NAM, FBI, NASA, OPEC, ECNEC.


*NAM: Non-Aligned Movement.

*FBI: Federal Bureau of Investigation.

*NASA: National Aeronautics and Space Administration.

*OPEC: Organization for the Petroleum Exporting Countries.

*ECNEC: Executive Committee of National Economic Council.