সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ২০১৫

  • ২০১৫২০১৫
  • সার্ভেয়ার (সার্ভেয়িং) টেকনোলজিসার্ভেয়ার (সার্ভেয়িং) টেকনোলজি

১। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ"-এর উপর একটি অনুচ্ছেদ লিখুন।                                           ১০

উত্তরঃ বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি। তবে এই স্বাধীনতা এত সহজভাবে আসে নি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বেদনার ইতিহাস হলেও তা গৌরবোজ্জ্বল মহিমায় ভাস্বর। পূর্ব পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে রাষ্ট্রভাষার প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী পশ্চিম পাকিস্তানে সাধারণভাবে ব্যবহৃত ভাগ জনগণের মাতৃভাষা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেয়। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাঙালি জাতির কোনো আপত্তি ছিল না। তবে তারা চেয়েছিল উর্দুর পাশাপাশি সিংহভাগ জনগণের ভাষা বাংলাকেও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পেতে। কিন্তু তা না করে বাঙালি জাতিকে আন্দোলনের মুখে ঠেলে দেয়া হয়। সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা বাংলা আন্দোলন। ১৯৪৮ সালে শুরু হওয়া ভাষা আন্দোলন, ৫২- তে শহিদ হওয়া বরকত, সালাম, রফিক, জব্বারের রক্তে স্নাত হয়ে চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছিল। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের ভরাডুবি এবং যুক্তফ্রন্টের অভূতপূর্ব বিজয় লাভ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার ভিতকে নড়বড়ে করে দেয়। ১৯৬৫ সালে মৌলিক গণতন্ত্রের নামে আইয়ুব খান এক প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করে নেয়। তখন থেকেই স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক দফা দাবি উত্থাপিত হয়। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে টালবাহানা শুরু করে। ১৯৭১ সালের মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে জাতিকে মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। সারা বাংলায় শুরু হয় তুমুল আন্দোলন। আপোশ আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করে ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে গোপনে সৈন্য অস্ত্রশস্ত্র এনে শক্তি বৃদ্ধি করে; ২৫ মার্চের গভীর রাতে পাকবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাস, ইপিআর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চলে। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বমুহূর্তে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে (অর্থাৎ ২৫ মার্চ রাত ১২টার পর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ঘোষণাটি ছিল ইংরেজিতে, যাতে বিশ্ববাসী ঘোষণাটি বুঝতে পারেন। স্বাধীনতা ঘোষণার বাংলা অনুবাদ: "ইহাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছে, যাহার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ কর। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।" (বাংলাদেশ গেজেট, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, জুলাই, ২০১১) স্বাধীনতার ঘোষণা বাংলাদেশের সকল স্থানে তদানীন্তন ইপিআর এর ট্রান্সমিটার, টেলিগ্রাম টেলিপ্রিন্টারের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ২৬ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা এম.. হান্নান চট্টগ্রামের বেতার কেন্দ্র থেকে একবার এবং সন্ধ্যায় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয়বার প্রচার করেন। ২৫ মার্চের কালো রাতে পাকবাহিনী ঢাকার বুকে যে হত্যা ধ্বংসের খেলা শুরু করে, স্বাধীনতা ঘোষণার সাথে সাথে তাদের সে নিষ্ঠুর খেলা আরো বহুগুণ বেড়ে যায়। অগ্নিসংযোগ গোলাবর্ষণ করে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয় রাজধানী ঢাকাকে। ঢাকাসহ গোটা দেশে শুরু হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ। পাকিস্তানিদের রক্ত ধ্বংসের খেলায় সমগ্র দেশ প্রতিশোধ স্পৃহায় ফেটে পড়ে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলে হানাদারদের বিরুদ্ধে। আর এভাবে প্রতিরোধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করার দৃঢ়প্রত্যয়ে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে একেকজন সেক্টর কমান্ডারের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ শুরু করে এবং বিভিন্ন স্থানে পাকিস্ত ানিদের সাথে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। সাথে সাথে গোপন অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীকে জলে- ছলে-অন্তরীক্ষে মারাত্মকভাবে পরাজিত পর্যুদস্ত করে। শুধু মুক্তিযোদ্ধারাই নয়, দেশের সর্বস্তরের মানুষ দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে যুদ্ধে অংশ নেয়। দীর্ঘ নয় মাসের এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাঙালি জাতি অর্জন করে বহুল প্রত্যাশার চূড়ান্ত বিজয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশ একটি গৌরময় স্থান পেয়েছে। আজ আমাদের দায়িত্ব, এক সমুদ্র রক্ত আর ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে সুখী-সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত করা।

 

২। সন্ধি বিচ্ছেদ করুন                                                                                                          ৪

 () সংস্কার, () দেবেন্দ্র () উল্লেখ () কিঞ্চিৎ () মনোযোগ

উত্তরঃ

() সংস্কার = সম + কার

(দেবেন্দ্র = দেব + ইন্দ্র

(উল্লেখ = উৎ + লেখ

(কিঞ্চিৎ = কিম + চিৎ

(মনোযোগ = মনঃ + যোগ।

৩। এক কথায় প্রকাশ করুনঃ                                                                                                          

() কোথাও উন্নত কোথাও অবনত – বন্ধুর ।

 () উপকারীর উপকার স্বীকার করে না যে – অকৃতজ্ঞ ।

() একই সময়ে বর্তমান – সমসাময়িক ।

() দুবার যার জন্ম হয় - দ্বিজ ।

() জয় করবার ইচ্ছা - জিগীষা।